স্টাফ রিপোর্টার | বাঘারপাড়া (যশোর):     যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুষ্টি সপ্তাহের অর্ধ লক্ষাধিক টাকা নয়-ছয় করে পকেটস্থ করার অভিযোগ উঠেছে।
নিজেদের পছন্দ মত তালিকা ও পুষ্টিকর খাদ্য বিতরণেও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ । নামকাওয়াস্তে কর্মসূচি পালন করে এ টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে।
সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৩ হতে ২৯ এপ্রিল পুষ্টি সপ্তাহ পালিত হয়। এ কর্মসূচি সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ১ লাখ ছাব্বিশ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় । ভ্যাট আইটি খরচ বাদে গত ৬ এপ্রিল সোনালী ব্যাংক বাঘারপাড়া শাখা থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৬’শ ত্রিশ টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উত্তোলন করেন।
পুষ্টি সপ্তাহে ইফতার, আপ্যায়ন, ডেকরেশন, পুষ্টিকর খাদ্য বিতরণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণ, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যায় দেখানো হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল ১’শ ২০ জনকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী মসজিদে জুমার বয়ানে ইসলামের দৃষ্টিতে সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে আলোচনা ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে পুষ্টি বিষয়ক প্রচারণা, বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা, শিশু-কিশোর ও গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি বিষয়ক বিশেষ পরামর্শ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বয়স্ক (ষাটোর্দ্ধ) ব্যক্তিদের হেলথ্ চেকআপ, ব্লাড প্রেসার, ব্লাডে গ্লুকোজ এর মাত্রা নির্ণয় করা, প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক এ শিশু-কিশোর ও গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি বিষয়ক বিশেষ পরামর্শ ও সেবা প্রদানসহ এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এবং দুস্থদের মাঝে পুষ্টিকর খাবার বিতরণ, পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ প্রদানের কথা থাকলেও নামেমাত্র খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেই পুষ্টি সপ্তাহ পালন করা হয়েছে। বিভিন্ন খাতে খরচ দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে টাকাগুলো লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । পুষ্টি সপ্তাহ পালন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করা হলেও তাকে কিছুই জানাননি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। উপজেলা পরিষদের কোনো জনপ্রতিনিধিকেও রাখা হয়নি এ কর্মসূচিতে।
পুষ্টি সপ্তাহে বরাদ্ধের পরিমান জানতে চাইলে বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলাম মনে নেই বলে জানান। পুষ্টি সপ্তাহে কোন অর্থ লুট হয়নি। এছাড়া সকল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ জানান, পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধনের আগের দিন আমাকে জানানো হয়েছে। কত টাকা বরাদ্দ, কি কেনা হবে, কোন খাতে কত টাকা ব্যায় হবে এবিষয়ে তিনি (স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) কিছুই জানাননি। তিনি আরো বলেন, অসুস্থতার কারণে উদ্বোধনের দিন এসিল্যান্ডকে পাঠিয়েছিলাম।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহিন জানিয়েছেন, বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুষ্টি সপ্তাহে অনিয়মের প্রমান পেলে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।